রোজা রাখার স্বাস্থ্যের উপকারিতা বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে

রোজা রাখলে স্বাস্থ্য  অনেক ধরনের উপকার রয়েছে বিজ্ঞানীদের মতে তা বিস্তারিত আলোচনা করব আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে। 

রোজা রাখলে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের মতে অনেক ধরনের উপকার রয়েছে তা বিস্তারিত আলোচনা করব আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে।

আমরা সাধারণত হাজার হাজার বছর ধরে রোজা পালন করে আসতেছি রোজা রাখার স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু উপকারী এবং কতটুকু ক্ষতিকর তা চিকিৎসাবিজ্ঞানে জানা ছিল না। তবে গত 20 /30 বছর রোজা নিয়ে গবেষণা অনেক এগিয়েছে এখন কিছু আশ্চর্যজনক উপকারিতা প্রমাণ পাওয়া গেছে বিজ্ঞানের মতে। 


এখন আমরা জানবো রোজা রাখার ৭ টা বৈজ্ঞানিক উপকার। এবং কিভাবে রোজা রাখলে এই স্বাস্থ্য উপকারিতা বেশি করে পাওয়া যায়। 


রোজা রাখার উপকারিতা 


তারুণ্য ধরে রাখা থেকে সুরক্ষা দেওয়া 

রোজার এই উপকারিতা চিকিৎসাবিজ্ঞানে আমরা জানতে পেরেছি গত কয়ে এক দশকে জাপানের এক বিজ্ঞানী নোবেল পুরস্কার পেয়েছে এই বিষয়ে কাজ করে। আমাদের সারা শরীর টিলিওন টিলিওন কোষ  দিয়ে গঠিত এই কোষগুলো একেকটা  ছোটখাটো কারখানার মত সারাক্ষণ কাজ চলতেছে এবং সেই সাথে কিছু আবর্জনা তৈরি হচ্ছে কিছু যন্ত্রপাতি ভেঙে যাচ্ছে কিছু মেশিন নষ্ট হচ্ছে সেগুলো সরাতে হবে এই কাজটা কোষ নিজে করে অটোফিজিও মাধ্যমে অকার্যকর ক্ষতিকর  জিনিসগুলোর রিসাইকেল করে  অর্থাৎ আবার ব্যবহারযোগ্য করে তোলে। কোষকে সতেজ হতে সাহায্য করে শরীরের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়া ঠিকভাবে না হওয়ার কারণে ব্রেনের বিভিন্ন রোগ  হতে পারে। আমরা যখন সারাদিন খাওয়ার মাঝে থাকি অটোফিজিও প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে থাকে অন্যদিকে রোজা অবস্থায় অটোফিজিও প্রক্রিয়া বেড়ে যায়। এটা একটু আশ্চর্যজনক মনে হতে পারে কারণ খাবার না খেলে মনে হতে পারে শরীরের ক্ষতি হচ্ছে কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে  রোজা অবস্থায় অটোফিজিও কাজ বেড়ে যায়। রোজা ছাড়াও অটোফিজিও প্রক্রিয়া  বাড়ানো অনেক উপায় রয়েছে যেমন ব্যায়াম 


মেটাবলিক সুইচ করে চর্বি কমিয়ে ফেলা 

রোজা রাখার স্বাস্থ্যের উপকারিতা বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে

আমাদের শরীর চালানোর জন্য জ্বালানীর প্রয়োজন হয় শরীর সেটা খাবার থেকে  বা আগে থেকে জমিয়ে রাখা গ্লাইকোজেন থেকে নিয়ে থাকে। আমরা সাধারণত যখন রোজা রাখি ১০-১২ ঘন্টা এই গ্লাইকোজেন শেষ হয়ে আসে। তখন আমাদের চালানোর জন্য শরীরকে চর্বিতে হাত দিতে হয় এইটা কি বলে মেটাবলিক সুইচ। একটি জটিল প্রক্রিয়া কে ছোট করে বললাম আপনি চাইলে গুগল সার্চ দিতে পারেন বিস্তারিত জানতে। সম্প্রতি গবেষণায় জানা গেছে মেটাবলিক সুইচ ফলে আমাদের স্বাস্থ্যের বেশ কয়েকটি উপকারে  সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের হার্ট ভালো রাখা, পেটের চর্বি কমায়, ব্লাড প্রেসার কমায়, রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, এইনধরনের বেশ কিছু উপকার পাওয়া যায়। তবে রোযা ভেঙ্গে আমরা এমন কিছু কাজ করি যা হার্ট  জন্য ক্ষতিকর যেমন বাজার থেকে কিনে আনা ভাজাপোড়া খাওয়া। এগুলো ট্রানস্ফার থাকার সম্ভাবনা রয়েছে যা  শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। ২০২০ সালে একটি গবেষণায় দেখা গেছে ঢাকা উত্তরায় হোটেলে  বা রেস্তুরায় ব্যবহৃত  PH বা ডালটা ৯২ শতাংশ অতিরিক্ত মাত্রা ট্রানস্ফার আছে এই ট্রানস্ফার হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায় তাই ভাজাপোড়া ফাস্টফুড  অনেক প্রক্রিয়াজাত খাবার এগুলো এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ দেখা যায় রোজা মাসে আমরা বেশি করে ভাজাপোড়া খেয়ে থাকি। 


পেটের স্বাস্থ্য ভালো হওয়া 

আমাদের নাড়িভুঁড়ি তে অনেক অনেক জীবাণু বসবাস রয়েছে  যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ বাড়ানোর জন্য এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ,না খেয়ে থাকার কারণে আমাদের নাড়িভুঁড়ি তে জীবাণু সংখ্যা বাড়তে থাকে তাই রোজা রাখলে এখানে উপকারিতা রয়েছে। উপকারী জীবাণুগুলোকে আর একটু সাহায্য করার জন্য টক দই খেতে পারেন। 


রোজার মাধ্যমে ওজন কমানো 

বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে করা 35 টির বেশি  গবেষণা একত্র করে দেখা গেছে রমজানের পরে গড়ে এক থেকে দেড় কেজি ওজন কমে। এটা একটি গড় হিসাবে ওজন দেখা গেছে কার ওজন বেড়েছে কার ওজন কমেছে বা কারো ওজন আরো বেশি কমেছে। সব ওজন একসাথে নিলে দেখা যায় গড় ওজন কমেছে। 


রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ 

রক্ত সুগারের মাত্রা থেকে নির্ণয় করা যায় ডায়াবেটিসের লক্ষণ। নির্দিষ্ট পরিমাণ চেয়ে সুগারের বেশি থাকলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। রোজা রাখলে এই থেকে উপকার পাওয়া যায়। তুরস্কের এক গবেষকরা ইরান, মিশর, কুয়েত আরো কয়েকটি দেশে মোট ১৬ টি গবেষণা একত্রিত করে দেখা গিয়েছে রমজানে রোজা রাখার পর নারি পুরুষ উভয়েরই রক্তের সুগারের মাত্রা আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। আরেকটি ইন্দোনেশিয়া 28 টি গবেষণা একএে করে দেখা গেছে রোজা রাখলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে যারা ডায়াবেটিস রোগী ওষুধ খাচ্ছেন রমজান মাসে কিভাবে ওষুধ খাবেন তার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিবেন।  


রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ 

আমাদের রক্তে এক প্রকারের চর্বি থাকে কোলেস্টেরল। রক্ত কোলেস্টেরল পরিমাণ বেশি থাকলে রক্তনালীতে চর্বি জমে নালী সরু হয়ে যেতে পারে ফলে হার্ট অ্যাটাক স্ট্রোক  ঝুঁকি বেড়ে যায়। রোজা রাখলে রক্ত কোলেস্টেরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে । বাহারাম, সৌদি আরবা আমিরাত সারাবিশ্বে করা 91 টি গবেষণা একত্রিত করে দেখা গেছে  রমজাননে রোজা রাখলে রক্তের কোলেস্টেরল মাএা নিয়ন্ত্রণে থাকে। 

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ 

2019 সালে লন্ডনে ৫ টি মসজিদে একটি গবেষণা করা হয় নাম লন্ডন রমদান স্টাডিং  রমজানের আগে পরে  ব্লাড প্রেশার মেপে দেখা হয় কোন পরিবর্তন হয়েছে কিনা সেখানে দেখা গেলো ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে অনেকে এসেছে রোজা রাখার পর। ভারত , পাকিস্তান কাতার এরকম আরো 32 গবেষণায় একসাথে করে দেখা গেছে  রমজানের রোজা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে  আসে ওজন না কমলে। সেহরি ইফতারের ফলমূল খেলে ব্লাড প্রেসার আরো নিয়ন্ত্রণে আসবে

এ ধরনের নিত্য নতুন তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজটি এখনি লাইক দিয়ে সাথে থাকুন নতুন নতুন আপডেট পেয়ে যাবেন

আরো জানুন


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url