প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন/ঋণ নেওয়ার নিয়ম এবং বিস্তারিত

আজকের এই পোস্ট থেকে আমরা জানবো -প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কিভাবে প্রবাসীদের জন্য ঋণ নিতে হয়। কিভাবে আবেদন করতে হয়। সুদের হার কত থাকবে। কত টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে এবং ঋণ পরিশোধের সময় সমস্ত বিষয় আলোচনা করব প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক নিয়ে

আমরা অনেকেই রয়েছি বিদেশ যেতে চাচ্ছে কিন্তু বিদেশে যাওয়ার জন্য  যে টাকা প্রয়োজন সে টাকা আপনার কাছে নেই। আপনি চাইলে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিদেশ চলে যেতে পারেন। তাছাড়া আপনি চাইলে কৃষিকাজের জন্য। বাড়িঘর পুর্নবাসনের জন্য ঋণ গ্রহণ করতে পারেন। বিস্তারিত জেনে নিই কিভাবে ঋণ নিতে হবে। 

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন/ঋণ  নেওয়ার নিয়ম এবং বিস্তারিত

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে চার ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকে। এই চার ধরনের ঋণ বিভিন্ন ক্যাটাগরির হয়ে থাকে। এবং ঋণের প্রক্রিয়া আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। নিচ থেকে চার ধরনের ঋণ সম্পর্কে জেনে নেই 

  • পূর্ণবাসন 
  • বিশেষ পূর্ণবাসন 
  • অভিবাসী ঋণ প্রদান 
  • বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার 

এই চারটি ঋণ প্রদান করে থাকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। এখান থেকে যেকোনো কেউ যেকোনো ঋণ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। তবে সেজন্য কিসের শর্ত সাপেক্ষ রয়েছে। চলুন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য  নিচ থেকে প্রকারভেদ এবং শর্ত  সাপেক্ষ এবং যোগ্যতা গুলো জেনে নেই। 


অভিবাসী ঋণ নেওয়ার নিয়ম 

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে অভিবাসী ঋণ তারাই নিয়ে থাকে যারা কাজকর্ম  জন্য বিদেশে যাওয়ার টাকা পয়সা না থাকে তাদের কে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে  ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হলে যোগ্যতা প্রয়োজন রয়েছে এবং কিছু ডকুমেন্ট প্রয়োজন রয়েছে তার নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 


অভিবাসী ঋণ নেওয়ার যোগ্যতা 

  • আপনাকে বিদেশগামী যাওয়া  জন্য ভিসা পেতে হবে। যেকোনো কাজকর্মের জন্য বিদেশ যাওয়ার জন্য ভিসা হাতে পাওয়ার পর অভিবাসী  ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। 
  • আপনি বিদেশ চলে যাওয়ার পর। আপনার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন,  টাকা পরিশোধের করার সক্ষমতা থাকতে হবে।
  • জামিনদার ব্যক্তির আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকতে হবে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি আপনার জামিন নিবে ওই ব্যক্তির টাকা-পয়সা এবং জমিজমা থাকতে হবে। 
  • প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে যে ব্যক্তির ঋণ নিবে ওই ব্যক্তির ভিসা পরীক্ষা করার জন্য 4কপি ছবি একটি মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। তিন দিনের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে আপনার ঋণ কনফার্ম করা হবে। 


প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক অভিবাসী ঋণ নেওয়ার জন্য কি কাগজ লাগবে  


প্রতিটি ঋণের ক্ষেত্রে কিছু প্রক্রিয়ায় রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো ডকুমেন্ট।  ওই বেশি ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হবে সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো। 

  • অভিবাসী ঋণ নেওয়ার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক যেকোন শাখা থেকে  আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। 
  • আবেদনকারীর ৪ কপি রঙিন ছবি। ন্যাশনাল আইডি কার্ড ডকুমেন্ট  প্রদান করতে হবে। 
  • অভিবাসী ঋণ আবেদনকারীর স্থায়ী/বর্তমান  ঠিকানা প্রমাণ করার জন্য ডকুমেন্ট প্রদান করতে হবে । 
  • আবেদনকারীর জামিনদার ২ জন লাগবে এর দুই জনের ১  কপি করে রঙিন ছবি প্রদান করতে হবে। এবং পাশাপাশি জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করতে হবে। স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা প্রমাণ ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে 
  • ঋণ আবেদনকারীর শারীরিক যোগ্যতা সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে। 
  • জামিনদারের যেকোনো একজনের তিনটি চেকে স্বাক্ষর করতে হবে।  
  • যে ব্যক্তি ঋণের জন্য আবেদন করবে ওই ব্যক্তির বীমা সুবিধা নিতে হবে। 


প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক অভিবাসী ঋণ সুদের হার কত 

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পর গ্রাহককে ২ মাস পরে থেকে টাকা পরিশোধ করতে হবে টাকা পরিশোধের পাশাপাশি। যে পরিমাণ টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে ঐ টাকার উপর শতকরা ৯% সুদ দিতে হবে। 


প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক অভিবাসী ঋণ সুবিধা 

নতুন ভিসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়া যাবে। re-entry ভিসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন 2 টাকা ঋণ নেওয়া যাবে। ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে নতুন ভিসার জন্য সর্বোচ্চ তিন বছর। এবং re-entry ভিসার জন্য সর্বোচ্চ দুই বছর সময় দিয়ে থাকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। সকল ডকুমেন্ট যাচাই-বাছাই করার পর সাত দিনের মধ্যে গ্রাহক টাকা হাতে পেয়ে যাবে। 


প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক পূর্ণবাসন ঋণ নেওয়ার নিয়ম। 

বাংলাদেশের যেকোনো গ্রাহক  কর্মক্ষেত্র উদ্দেশ্যে বিদেশে গিয়ে ব্যর্থ হয় দেশে আবার চলে আসে। তখন নিজেকে সচ্ছল করার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক পূর্ণবাসন ঋণ দিয়ে থাকে। ঐ ব্যক্তি  চাইলে পুনর্বাসন ঋণের মাধ্যমে নিজে কর্মক্ষেত্র গড়ে তুলতে পারে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে। 


পূর্ণবাসন ঋণ নেওয়ার যোগ্যতা 

  • যে ব্যক্তি এই ঋণের জন্য আবেদন করবে। ওই ব্যক্তি বিদেশ থেকে ব্যর্থ হয়ে আসার কারণ এবং সঠিক ডকুমেন্ট প্রমাণ হিসাবে দেখাতে হবে। এবং ঋণগ্রহীতার জানামতে হিসেবে দলিল জমা দিতে হবে । 
  • সেই কাজ জন্য টাকা ঋণ নেবেন যোগ্যতা এবং সার্টিফিকেট দেখাতে হবে 
  • পূর্ণবাসন ঋণ নেওয়ার কাগজপত্র 
  • আবেদনকারী ৩ কপি রঙিন ছবি পাসপোর্ট অথবা জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, বর্তমান ঠিকানা স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণপত্র। 
  • জামিনদারের দুই কপি রঙিন ছবি, পাসপোর্ট অথবা জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, স্থায়ী ঠিকানা বর্তমান ঠিকানা প্রমাণপত্র। 
  • যে ব্যক্তি ঋণগ্রহীতার জামিনদার হবে। ওই ব্যক্তিকে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকতে হবে 
  • ট্রেড লাইসেন্স ফটোকপি যদি না থাকে উল্লেখ করতে হবে। 
  • যেই প্রকল্প করবেন প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা অথবা সার্টিফিকেটের সনদপত্র। 


 পূর্ণবাসন ঋণ সুবিধা 

পূর্ণবাসন ঋণ সর্বোচ্চ 50 লক্ষ টাকা। জামানতবিহীন ঋণ সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা 3 লক্ষ টাকার এগেনস্টে 5 লক্ষ টাকা জামানত দিতে হবে। ঋণের পরিমাণ 5 লক্ষ টাকার উপরে হলে মালিকানাধীন রেজিস্ট্রেশন মোট গেজেট মূলক ব্যাংক অনুকূলতা থাকতে হবে। ঋণ পরিশোধের সর্বোচ্চ 10 বছর পর্যন্ত। সুদের হার 9% পর্যন্ত। ঋণের আবেদন করার পর সর্বোচ্চ 10 দিনের মধ্যে টাকা পেয়ে যাবে। এ ধরনের ঋণ নিতে কোন সার্ভিস লাগেনা। 


বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ 

বাংলাদেশ যেকোনো নাগরিক বৈধভাবে বিদেশে অবস্থান করলে ওই ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল পরিবারের যে কেউ চাইলে এই বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ গ্রহণ করতে পারে। তবে সকল ডকুমেন্ট অরজিনাল এবং তাদের শর্তসাপেক্ষে ঋণ গ্রহণ করতে হবেনিচ থেকে  পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে সকল ইনফরমেশন জেনে নিতে পারেন 

ডাউনলোড সকল ইনফরমেশন 

উপরের পিডিএফ ফাইলটি যদি ডাউনলোড করে নেন এখানে সকল তথ্য দেওয়া রয়েছে ঋণ গ্রহণ করার জন্য কি কি কাগজপত্র, ঋণ পরিশোধের সময়, সুদের হার বিস্তারিত পিডিএফ ফাইলে পেয়ে যাবেন। 


বিশেষ পূর্ণবাসন ঋণ নেওয়ার নিয়ম 

কেভিড ১৯ এর কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে সকল নাগরিক বাংলাদেশের চলে এসেছে এবং অসুবিধার মধ্যে রয়েছে তাদেরকে পূর্ণবাসন  করার জন্য এরিন সুবিধাটি চালু করা হয়েছে ২০২০ সালে। এই ঋণ  সুবিধাটি তারা গ্রহণ করতে পারবে  যারা ১জানুয়ারি ২০২০ তারিখ থেকে দেশে আসা শুরু করেছে। 


বিশেষ পূর্ণবাসন ঋণ নেওয়ার যোগ্যতা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। 

  • যেখানে ব্যবসা শিল্প প্রতিষ্ঠা হবে সেখানকার শাখ থেকে  ঋণ  জন্য আবেদন করতে হবে। 
  • একই জানুয়ারি 2020 সালের পর যারা দেশে চলে এসেছে তাদের জন্য এই ঋণ বিবেচিত হবে। 
  • ঋণ নেওয়ার জন্য ফরমে আবেদন করতে হবে। 
  • আবেদনকারী পাসপোর্টসহ কাগজপএ প্রমাণপত্র প্রদান করতে হবে। 
  • আবেদনকারীর ওই দেশের চাকরির আইডি কার্ড, রেমিট্যান্স পাঠানোর বৈধ কাগজপত্র দেখাতে হবে। 
  • আবেদনকারীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা পাসপোর্ট। 
  • যে প্রকল্পের জন্য ঋণ নেবে সেই প্রকল্পের বিস্তারিত বিষয়বস্তু দেখাতে হবে। 
  • প্রকল্পের অভিজ্ঞতা বা সার্টিফিকেট দেখাতে হবে। 
  • জামানতকারীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং স্থায়ী, বর্তমান ঠিকানা প্রমাণপত্র। 
  • আরো বিস্তারিত জানতে পিডিএফ ফাইলটি ডাউনলোড করে নিন। 


 বিশেষ পূর্ণবাসন ঋণ সুবিধা 

বিশেষ পূর্ণবাসন ঋণ সর্বোচ্চ 5 লক্ষ টাকা পর্যন্ত দিয়ে থাকে।  জামানতবিহীন ঋণ এর সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত দিয়ে থাকে। ঋণ মেয়াদ সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। সুদের হার 4 %

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url